প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারী, ২০২২ ০৭:১৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্লাসের দোকানে কাজ করত সুমন। এলাকায় সবাই একনামে চেনে গ্লাস কাটার মিস্ত্রি গ্লাস সুমন নামে। পরে এলাকায় ‘গ্লাস কোম্পানি’ নামে একটি চক্র গড়ে তোলে সুমন। ওই দলের সব সদস্যই তার হাতে মার খেয়ে দলে নাম লিখিয়েছে। র্যাব বলছে, দীর্ঘ দিন ধরে ওই ‘গ্লাস কোম্পানি’র হাতেই রয়েছে কেরানীগঞ্জসহ আশপাশের এলাকার মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ। তবে গ্লাস সুমনের নামে পাঁচটি মামলা থাকলেও হত্যা মামলার আসামি হলেন এই প্রথম।
গতকাল রোববার রাতে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সুমনসহ তার চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১০।
আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এতে জানান সংস্থাটির মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা সুমন গ্লাস সুমনসহ গ্রেপ্তাররা হলেন-সোহাগ লম্বু সোহাগ, শরিফ গরীব, জনি হর্স পাওয়ার জনি ও হারুন। তাদের কাছ থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত সুইচ গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্লাসের দোকানে কাজ করার সময় ভাঙা গ্লাস দিয়ে বিভিন্ন সময় মানুষের ওপর আক্রমণ করে জখম করাই এলাকায় গ্লাস সুমন হিসেবে পরিচিতি হয়ে ওঠে। তার দলের সদস্য ১২ থেকে ১৫ জন বলে জানায় র্যাবের এই কর্মকর্তা। এ ছাড়া গ্রেপ্তার সুমন ওরফে গ্লাস সুমন হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে হত্যাকাণ্ডে সশরীরে উপস্থিত থেকে ভুক্তভোগীর রগ কাটেন।
র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে কিছুদিন পূর্বে ভুক্তভোগী সায়মন “গ্লাস কোম্পানি” মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য দেওয়া কে কেন্দ্র করে শত্রুতা শুরু হয়। ওই তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। পরে গ্লাস সুমন ও তার সহযোগীরা সায়মনকে উচিত শিক্ষা দিতেই হাত-পায়ের রগ কেটে দেন।
র্যাব জানায়, প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে গ্রেপ্তারেরা হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত করে। তাদের সন্দেহ ছিল সায়মনের দেওয়া তথ্যের কারণে তাদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ জন্য ঘটনার কয়েক দিন আগে বালুরচর মুক্তিরবাগ বালুর মাঠে বসে গ্লাস সুমনের নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডের চূড়ান্ত পরিকল্পনায় চক্রের পাঁচ-ছয়জন সদস্য অংশ নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শনিবার (১৫ জানুয়ারি) গ্লাস সুমন সিন্ডিকেটের সদস্যরা সায়মনকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যান পরিকল্পনারে স্থানে। সেখানে হাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। এর একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায় তারা। পরে ভুক্তভোগীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। আজ সোমবার নিহত ভাই আরস আলম কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় ৭-৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামির একটি হত্যা মামলা করেন।
তিনি বলেন, এদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চক্রের সদস্য হারুন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে। পরে গ্লাস সুমনের নেতৃত্বে সাত থেকে আটজন সক্রিয়ভাবে ৩০ মিনিট ধরে কিলিং মিশন চালায়।