প্রকাশ: ৯ জানুয়ারী, ২০২২ ০৭:০২ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রেমের সম্পর্কের একপর্যায়ে স্বপ্না নিজেই শারীরিক সম্পর্ক করতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। পরে মাথা ব্যথার ওষুধ বলে ঘুমের বড়ি খাইয়ে শারীরিক সম্পর্ক করতে ব্যর্থ হয়ে ক্ষোভে মা জয়ফুল বেগম ও মেয়ে আকলিমা আক্তার স্বপ্নাকে হত্যা করে পাষুণ্ড আনোয়ার হোসেন।
ওই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার পাশাপাশি সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধরের তত্ত্বাবধানে সিআইডির এলআইসি শাখা ছায়া তদন্ত শুরু করে। এর একপর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের তথ্য ও উপাত্ত দেখে আসামি আনোয়ার হোসেনের (৩৬) সঙ্গে ঘটনার যোগসূত্র পায় সিআইডি।
পরে গতকাল রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন গোদনাইল এলাকা থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির এলআইসি শাখা। আজ রোববার (০৯ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর মালিবাগ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর এতথ্য জানান।

বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, আসামির কাছ থেকে জানা গেছে গত ৫ বছর আগে নারায়ণগঞ্জে বসবাস করার সময় নিহত স্বপ্নার সঙ্গে আসামি আনোয়ার হোসেনের পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে স্বপ্নার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় আনোয়ার। ঘটনার প্রায় ২০ থেকে ২৫ দিন আগে স্বপ্নার বড় ভাই জহুরুল চৌধুরীর বাড়িতে ভবন নির্মাণের কাজ করে আসে আনোয়ার। বাসায় কেউ না থাকায় আনোয়ারা মাথা ব্যথার ওষুধ নিয়ে আসতে বলে স্বপ্না। ওই দিন সন্ধ্যার পর আনোয়ার তাদের বাড়ি গিয়ে স্বপ্নার সঙ্গে গল্প করতে থাকে। একপর্যায়ে, স্বপ্না ও তার মায়ের রাতের খাবার শেষ হলে আনোয়ারের কাছে ওষুধ চায়। পরে অসৎ উদ্দেশ্যে জন্য তার সঙ্গে নিয়ে আসা ঘুমের ওষুধকে মাথা ব্যথার ওষুধ হিসেবে প্রত্যেককে ৩টি করে ট্যাবলেট দেয় খাওয়ায়।
তিনি বলেন, পরে ওষুধ খেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে একই রুমে ঘুমিয়ে পড়ে মা ও মেয়ে। সুযোগের অপেক্ষায় থাকা আনোয়ার হোসেন অচেতন স্বপ্নাকে তার মায়ের রুম থেকে পাশের রুমে নিয়ে যাওয়ার সময় স্বপ্না জেগে যায়। তখন আনোয়ার জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করলে স্বপ্না বাঁধা দেয়। এতে আনোয়ার ব্যর্থ হয়ে ধারালো বটি দিয়ে স্বপ্না ও স্বপ্নার মা জয়ফুল বেগমকে গলা কেটে হত্যা করে দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যায়।
চলতি বছরের ০১ জানুয়ারি জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকায় নিজ ঘরে জয়ফুল বেগম (৫০) ও আকলিমা আক্তার স্বপ্না (৩২) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় থানা-পুলিশ। পরের দিন ওই ঘটনার বিষয়ে ভিকটিম জয়ফুল বেগমের ভাই মানিক মিয়া অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে মেলান্দহ থানায় একটি মামলা করেন।
উল্লেখ্য, জয়ফুল বেগমের ওমান প্রবাসী দুই ছেলে হাসান চৌধুরী (২৮) ও খালেক চৌধুরী (২৬) ওমান থেকে ফোন করে তাদের মা-বোনকে না পেয়ে তাদের মামা মানিক মিয়াকে তাদের বাড়িতে পাঠান। তাদের মামা বাড়ি গিয়ে দরজা-জানালা বন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় ঘরের দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলে পৃথক দুটি কক্ষে তার বোন ও ভাগনির গলাকাটা মৃতদেহ দেখতে পায়।