প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০১:২৮ পূর্বাহ্ন
বিশেষ রিপোর্ট : নিজের চুলের সমাধান করতে গিয়ে ২৫ ধরণের প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তেল ও প্যাক তৈরি করে ফেলেন। এক পর্যায়ে তা কাজে দেয়। বন্ধ হয় চুল পড়া। এরপর নিকটাত্মীয় মেয়েদের চুল পড়া বন্ধে কাজ শুরু করেন। তারপর নিজেদের গন্ডি পেরিয়ে উপকার পেতে শুরু করেন অন্যান্য নারী ও পুরুষ।
এভাবেই উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেরিন ঋতু।
জানতে চাইলে ঋতু বলেন, আমি নিজে চুল পড়া সমস্যায় ভুগছিলাম কিছুদিন আগে। তারপর হোমমেড এগুলো তৈরি করি এবং নিজে ব্যবহার করতে শুরু করি এবং আমার সমস্যা সমাধান হয়। তখন থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তা আমার মাথায় আসে।
এখন পড়ালেখার পাশাপাশি আমি একজন ছোটখাটো উদ্যোক্তা। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হোমমেড হেয়ার অয়েল এবং হেয়ার প্যাক নিয়ে কাজ করছি। আমার এই উদ্যোগ খুব অল্প দিনের হলেও এখন পর্যন্ত এই প্রোডাক্টগুলো ব্যবহারে সবাই অনেক ভাল ফলাফল পেয়েছেন।
আমি ভবিষ্যতে আমার এই ছোটখাটো ব্যবসাকে অনেক বড় পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। আমি চাই আমার এই হোমমেড কেমিক্যাল মুক্ত প্রোডাক্ট গুলো দিয়ে ভাইয়া এবং আপুদের চুলপড়াসহ চুলের সকল সমস্যার সমাধানে পাশে থাকতে।'
জানা যায়, খাঁটি নারিকেল তেলের সাথে প্রাকৃতিক ২৫টি উপাদান দিয়ে তৈরি এই হেয়ার অয়েল এবং হেয়ার প্যাক।
ঋতু বর্তমানে ঢাকা থেকে সারাদেশে বিক্রি করছেন। কুরিয়ারের মাধ্যমে সারাদেশে হোম ডেলিভারি দিচ্ছেন তিনি। পণ্যের দাম ৬০০ টাকা। পণ্য হাতে পাওয়ার ক্রেতা মূল্য পরিশোধ করে থাকেন।
নিজের প্রয়োজনে তৈরি করা পণ্যটি ব্যবসায় রুপান্তর করলেন কবে হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন,
ব্যবসার বয়স মাত্র তিন মাস। এরমধ্যেই ব্যাপক সারা মিলেছে। সবাই উপকার পাচ্ছেন। অল্প দিনেই সবার চুল পড়া বন্ধ হয়েছে। আবার অনেকের কমেছে।
কেমন সারা পাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুরুতে আলহামদুলিল্লাহ সেল অনেক ভালোই ছিল। এখনো ভালোই যাচ্ছে। ক্রেতারা ভালোই ফিডব্যাক দিচ্ছেন। গড়ে প্রতি মাসে অন্তত ৬০ টি পণ্য সেল হচ্ছে।
আয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, মোটামুটি নিজের হাত খরচ চলার মত আয় হয়। সামনে বড় আকারে গেলে আয় আরও বৃদ্ধি পাবে।
এরকম উদ্যোগ কেউ শুরু করলে সাধারণত শুরুর দিকে নানান জনে নানান কথা বলে। আপনার ক্ষেত্রেও কি এরকম শুনতে হয়েছে, একজন উদ্যোক্তার পেছনে অনেক বাঁধাই থাকে। পিছে লোকে অনেক ধরণের কথাই বলে। কিন্তু সবকিছু অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই মূল লক্ষ্য। আমিও সেই কাজটাই করছি।
নানান জনে বলেছে, এরকম কত পণ্য দেখলাম পড়ে সবাই চুপশে যায়। বিশেষ করে কাছের বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনরাই বেশি সমালোচনা করে। সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। মানুষের যদি উপকারে আসে তাহলে আমার পণ্য চলবে।
জানতে চাইলে ঢাকার একজন ক্রেতা শাহীন আক্তার বলেন, আগে অনেক চুল পড়ত। অনেক পণ্য ব্যবহারেও কোনো কাজ হচ্ছিল না। অবশেষে কেশ কাহন ন্যাচারাল হেয়ার প্যাক ও হেয়ার ওয়েল ব্যবহারে এক সপ্তাহের মধ্যেই চুল পড়া বন্ধ হয়েছে।
জীবন নাহার অন্তরা নামে বগুড়ার একজন নারী জানান, মাথায় হাত দিলেই চুল উঠে আসত। ফেসবুকে কেশ কাহন হেয়ার ওয়েল ও হেয়ার প্যাক দেখে অর্ডার করি। এরপর সেটা ব্যবহার করার পর অল্প সময়ে চুল পড়া বন্ধ কমে। এখন বলা চলে চুল পড়া অনেকটাই বন্ধ হয়েছে। খুবই ভালো মানের একটি পণ্য এটি।