প্রকাশ: ৫ জুলাই, ২০২১ ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর হাতিরঝিলে ঘুরতে আসা প্রেমিক যুগলদের ব্ল্যাকমেইল করত আলোচিত টিকটক হৃদয় বাবুর সহযোগীরা। তারা হাতিরঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদক সিন্ডিকেটও নিয়ন্ত্রণ করত। লকডাউন পুঁজি করে ইয়াবার হোম ডেলভারি করে আসছিল চক্রটি। এতে নেতৃত্ব দিত টিকটক হৃদয় বাবুর সহযোগী হিরো অনিক।
আজ সোমবার (০৫ জুলাই) বিকেলে কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। এসময় উপস্থিত ছিলেন র্যাব-৩'এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল রকিবুল হাসান, পিএসসি এবং উপ-অধিনায়ক মেজর রাহাত হারুন খান।

গ্রেফতাররা হলেন- অনিক হাসান ওরফে হিরো অনিক (২৫), শহিদুল ইসলাম উরুফে অ্যাম্পুল (৩৪), আবির আহমেদ রাকিব (২২), সোহাগ হোসেন আরিফ (৩৬) ও হিরো (২২)। একটি বিদেশী পিস্তল, ২ রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগাজিন, ধারালো অস্ত্র ৫টি, চেইন একটি, ৩০০ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট, ৭টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৩৪০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে টিকটক হৃদয় বাবুর সহযোগী হিরো অনিকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে র্যাব-৩-এর একটি দল। গ্রেফতারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানতে পারে র্যাব।
অনিক হাসান হিরো অনিক মগবাজার হাতিরঝিল ও তদসংলগ্ন এলাকার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং মাদক সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা। বর্তমানে তার নামে হত্যা, মাদক ও অস্ত্র, ডাকাতীসহ ০৯টি মামলা রয়েছে। তার গ্রুপের সদস্য সংখ্যা প্রায় ২০-২৫ জন। কিশোর অবস্থায় থেকেই সে অপরাধ চক্রের সাথে জড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে সে সংঘবদ্ধ দল গড়ে তোলে। সে ২০১৬ সালের আলোচিত “আরিফ হত্যা” মামলার মাধ্যমে পরিচিতি পায়।
তিনি বলেন, ‘গ্রেফতার অনিক হাসান ওরফে হিরো অনিক মগবাজার হাতিরঝিল ও তৎসংলগ্ন এলাকার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং মাদক সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা। সহযোগীদের কারও কোনো পেশা নেই। অপরাধ থেকেই মূলত তাদের আয়ের উৎস। তারা হিরো অনিকের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাত। শহিদুল ওরফে অ্যাম্পুলের নামে মাদক ও চুরির ছয়টি মামলা, আবিরের বিরুদ্ধে দুটি মামলা, সোহাগের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু অপহরণ, মাদক ও ডাকাতির তিনটি মামলা এবং হিরো অনিকের বিরুদ্ধে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত ও চুরির ৯টি মামলা রয়েছে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘হিরো অনিক একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছে এবং ছাড়াও পেয়েছে। লকডাউন পুঁজি করে মানুষ চলাচল কম হওয়ার কারণে হাতিরঝিল এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল সে। এছাড়া লকডাউনে যারা ঘুরতে যেত হাতিরঝিলে, তাদেরও টার্গেট করত। সে লকডাউন চলাকালে বাসায় বাসায় মাদক সাপ্লাই করতো বলেও স্বীকার করেছে র্যাব-৩'এর জিজ্ঞাসাবাদে।
তিনি বলেন, সংঘবদ্ধ দল মগবাজার, মধুবাগ, মীরবাগ, নতুন রাস্তা পেয়ারাবাগ, চেয়ারম্যান গলি, আমবাগান ও হাতিরঝিল এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, মাদক সিন্ডিকেট ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আসছিল। বিভিন্ন সময়ে সে ও তার দল হাতিরঝিলে আগত দর্শনার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ছিনতাই ও চাঁদাবাজী করত।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সে টিকটক হৃদয়কে টিকটক গ্রুপের নেশা ও আড্ডার জন্য মাদক সরবরাহ করত। সে মাদক সিন্ডিকেট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তার সঙ্গে গ্রেফতার অন্য চার আসামিও তার সহযোগী হিসেবে কাজ করত। তাদের কাছ থেকে মাদক চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আমাদের গোয়েন্দা অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।