প্রকাশ: ১৯ জুন, ২০২১ ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা: এনামুর রহমান বলেছেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনসমূহ রেট্রোফিটিংসে'র মাধ্যমে ভূমিকম্প সহনীয় করার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, ভূমিকম্পে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ইতিমধ্যে দেশের ছয়টি সিটি করপোরেশন ও তিনটি জেলার ভূমিকম্প ঝুঁকি মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে।
ভূমিকম্পসহ যেকোনো দুর্যোগ থেকে উত্তরণের জন্য জাতীয় কন্টিনজেন্সি প্ল্যানও তৈরি করা হয়েছে। ভূমিকম্প সহনশীল ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড হালনাগাদ করণের লক্ষ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাথে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করছে। প্রতিমন্ত্রী সিলেটে আয়োজিত "ভূমিকম্প ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ক অবহিতকরণ সভা"য় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোহসীন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(বুয়েট) এর অধ্যাপক ড. তাহামিদ এম আল হোসাইন,সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডঃ জহির বিন আলম, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডক্টর শারমিম রেজা চৌধুরী, গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর মহাপরিচালক ব্রিগে: (অব.) জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক এবং সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট লুৎফুর রহমান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভূমিকম্প এমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যার পূর্বাভাস দেয়ার উপায় এখনো বের করা যায়নি। আমাদের দেশের প্রধান প্রধান শহর গুলোতে মানুষ বাড়ার পাশাপাশি আবাসিক-অনাবাসিক স্থাপনা বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। কিন্তু এসব স্থাপনা কতটা মানসম্পন্ন, বড় ধরনের ভূমিকম্পে সেগুলো টিকে থাকবে কিনা এই আশঙ্কা প্রবল। ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে প্রয়োজনীয় খোলা জায়গাও নেই আমাদের বড় শহরগুলোতে।
অভিযোগ রয়েছে দেশে ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড মানা হয়না। ফলে মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পও বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। আর বড় ধরনের ভূমিকম্প ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। তাই ভূমিকম্পের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে সব ধরনের অবকাঠামো দূর্যোগ মোকাবেলার উপযোগী করে গড়ে তুলতে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এনামুর রহমান বলেন,বড় ধরনের ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি কতটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে তা বলা মুশকিল, তবে প্রস্তুতি থাকলে মোকাবিলা করতে সুবিধা হবে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সে কাজটাই করে যাচ্ছে। এ জন্য দল-মত নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহসীন তার বক্তৃতায় বলেন, বর্তমানে দেশে ভূমিকম্পন পরিমাপের জন্য ১০ টি স্টেশন রয়েছে । জাপান থেকে ভূমিকম্প ও সুনামি বিষয়ে (জাপানের) টোকিও'র জিআরআইপিএস ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টে ২ বছরের কোর্স সমাপ্ত করে ৪ জন বিজ্ঞানীর মধ্যে ১জন সিলেট স্টেশনে কর্মরত আছেন।
ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগে দ্রুত উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অ্যাকোয়াটিক সি সার্চবোট, মেরিন রেস্কিউ বোট, মেগাফোন সাইরেনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি ও যানবাহন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়েছে । এ কার্যক্রম সহজ করার জন্য আরো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান রয়েছে ।