প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, “জানুয়ারি শেষে অথবা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই দেশে ভ্যাক্সিন চলে আসবে। আগামী ৬ মাসে পর্যায়ক্রমে দেশের ৩ কোটি ভ্যক্সিন চলে আসবে। এই ভ্যাক্সিন মানুষের কাছে সুষ্ঠুভাবে বিতরণের জন্য সরকারের যথাযথ প্রস্তুতি নেয়া রয়েছে।”
আজ রোববার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে মহাখালীস্ত ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে ২টি ভ্যাক্সিন ল্যাব পরিদর্শন শেষে মিডিয়া ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, “ভ্যাক্সিন প্রদানের জন্য আমাদের প্রশিক্ষিত জনবল রয়েছে, ভ্যাক্সিন রাখার স্টোর প্রস্তুত করা হয়েছে, নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে কোল্ডবক্স ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা হয়েছে। কিভাবে ভ্যাক্সিন দেয়া হবে তার জন্য একটি গাইডলাইনও প্রস্তুত করা হয়েছে। যারা ভ্যাক্সিন প্রদানে সরকারের সমালোচনা করছে তারা সঠিক তথ্য না জেনেই কথা বলছে।”
ভারতে সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে ভ্যাক্সিন নেয়ার পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক কো-ভ্যাক্স ভ্যাক্সিন পাওয়া প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “আগামী মে-জুন মাসের দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক দেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের জন্য কো-ভ্যাক্স ভ্যাক্সিন পাঠানো হবে। চলমান অক্সফোর্ড ভ্যাক্সিন এর পাশাপাশি কো-ভ্যাক্স ভ্যাক্সিন চলে এলে দেশের প্রায় অধিকাংশ মানুষেরই ভ্যাক্সিন প্রাপ্তি ঘটবে।
১৮ বছরের নিচে, প্রেগন্যান্ট মহিলা ও বিদেশে থাকা নাগরিকদের পরিসংখ্যান উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “দেশে বর্তমানে ১৮ বছরের নিচে রয়েছে প্রায় ৩৭ ভাগ মানুষ, ৩০ লাখের মতো মহিলা গর্ভবর্তী এবং প্রায় কোটি মানুষ বিদেশে থাকায় অক্সফোর্ড ও কোভ্যাক্স ভ্যাক্সিন দিয়ে দেশের প্রায় সব মানুষেরই ভ্যাক্সিন প্রাপ্তি ঘটবে। তবে, এসব কিছুর পরও মানুষকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করা অব্যাহত রাখতে হবে।”
ব্রিফিংকালে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ব্লুমবার্গ কর্তৃক সম্প্রতি প্রকাশিত জরিপে বাংলাদেশের সাফল্য উল্লেখ করে জানান, “কোভিড মোকাবেলায় বাংলাদেশ যে সফল হয়েছে সেকথা এখন কেবল আমরা নই, খোদ আমেরিকার সংবাদ মাধ্যম ব্লুমবার্গ গত ৪-৫ মাসের বিশ্বব্যাপি কোভিড জরিপ শেষে বাংলাদেশকে কোভিড মোকাবেলায় ২০তম হিসেবে ও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এক নম্বর দেশ হিসেবে কৃতিত্ব দিয়েছে। এটি আমাদের জন্য বিরাট স্বীকৃতি। এই জরিপ খোদ আমেরিকাই রয়েছে ৪০তম অবস্থানে, ইউকে রয়েছে ৩৯তম অবস্থানে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, শ্রীলংকা, মায়ানমার এই দেশগুলিরও উপরে রয়েছে। এই কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার, এই কৃতিত্ব দেশের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের, এই কৃতিত্ব মিডিয়াসহ সকল করোনা যোদ্ধাদের।”
এর আগে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি এর ভ্যাক্সিন উইং ও ড্রাগ টেস্টিং উইং'এর পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন। ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি এর ড্রাগ টেস্টিং উইং মার্চ সালে অর্জন করায় এবং বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড (ইঅই) কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত হওয়ায় ও আমেরিকান অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড (অঘঅই) কর্তৃক সনদ পাওয়ায় অভিনন্দন জানান।
পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহাবুবুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসময় ল্যাবে কর্তব্যরত গবেষকদের কাছে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার খোঁজ-খবর নেন এবং পরামর্শ প্রদান করেন।